হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম মাহদি পানাহী বলেন, হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.)–এর জীবন, ব্যক্তিত্ব ও পারিবারিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন: এই মহান নারীর ১৮ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবন মুসলমানদের জন্য অসংখ্য চিরস্থায়ী শিক্ষায় ভরপুর।
তিনি হযরত জাহরা (সা.আ.)–এর বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের দিক উল্লেখ করে বলেন: অল্প সময় সত্ত্বেও ইসলামি ইতিহাসের এই বিশিষ্ট নারীর জীবন মুসলমানদের জন্য অনন্য ও অনবদ্য শিক্ষায় সমৃদ্ধ।
হাওজা ও নেজাম কেন্দ্রের সংগঠন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক বলেন: হযরত জাহরা (সা.আ.)–এর জীবনকে তিনটি মূল অক্ষের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করা যায়—
১. আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক
২. দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দাম্পত্য জীবন
৩. মায়ের ভূমিকায় তাঁর অসাধারণ অবদান
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহী হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.)–এর জীবনধারা অনুসরণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন: যদি আমরা সন্তানদের শিক্ষায় ও লালনপালনে তাঁর জীবনধারা অনুসরণ করি, তবে আজকের পরিবারের বহু সমস্যা দূর হবে এবং সন্তান লালনপালনের পথ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর অন্যদের জন্য দোয়ার প্রতি গুরুত্ব
সংগঠন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেন: হযরত জাহরা (সা.আ.) রাতের বেলায় ইবাদত করতেন এবং ইমাম হাসান (অ.)–এর বর্ণনা মতে, তিনি সর্বপ্রথম অন্যদের জন্য দোয়া করতেন এবং পরে নিজের জন্য—এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট শিক্ষা, যেখানে অন্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দীক্ষা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন: যদি আমরা বুঝতে পারতাম আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের বরকত কী, তবে কখনোই ইবাদতকে অবহেলা করতাম না।
বীর প্রজন্ম গঠনে পরিবারের ভূমিকা
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহী পরিবারকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনের মূল ভিত্তি উল্লেখ করে বলেন: পরিবারকে অবশ্যই বীর–সন্তান তৈরি করতে হবে। পিতা-মাতা নিজেরা বীরোচিত আদর্শ স্থাপন না করলে তাঁরা বীর সন্তান গড়ে তুলতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন: যদি সন্তানকে ধর্মীয় উপদেশ–নির্দেশনার ভিত্তিতে লালনপালন করা হয়, তবে প্রত্যেক সন্তানই ভবিষ্যতে একটি জাতীয় বীর হয়ে উঠতে পারে।
পারিবারিক জীবনে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর বৈশিষ্ট্য
যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর অনন্য দাম্পত্য জীবনের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন: আমিরুল মু’মিনিন আলী (অ.)–এর বর্ণনায় আছে, তাঁদের দাম্পত্য জীবনে কখনো রাগ–ক্ষোভের কোনো চিহ্ন দেখা যেত না। তাঁদের এই পরিপূর্ণ সমন্বয় সফল পরিবারের এক অনন্য উদাহরণ।
হুজ্জাতুল ইসলাম পানাহী হযরত জাহরা (সা.আ.)–এর বিশেষ গুণাবলি উল্লেখ করে বলেন: এই মহান নারীর অন্যতম বীরোচিত বৈশিষ্ট্য ছিল স্বামী–পরিবারের প্রতি তাঁর অনন্ত ভালোবাসা ও বিশ্বস্ততা—চাই ঘর হোক অভাবের সময়, চাই সমৃদ্ধির মুহূর্ত।
তিনি বলেন: মানুষ যদি সব অবস্থায় স্বামীর প্রতি নিজের ভালোবাসা অটুট রাখতে পারে, সেটি এক বীরোচিত আচরণ এবং হযরত জাহরা (সা.আ.)–এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।
তিনি আরও বলেন: হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর আত্মত্যাগী মনোভাব ছিল অত্যন্ত উজ্জ্বল—তিনি কখনো নিজের কষ্ট আমিরুল মু’মিনিনের (অ.) কাছে প্রকাশ করতেন না; বরং কঠিন পরিস্থিতিতেও পরিবারের জন্য আনন্দ ও প্রশান্তি নিয়ে আসার চেষ্টা করতেন। আজকের পরিবারের জন্য এটি এক মহান আদর্শ হতে পারে।
আপনার কমেন্ট